ক্ষীয়মান বিশ্বের অধিষ্ঠান হল দক্ষিণামূর্তি কালভৈরব।

সেই ভৈরবের শক্তিই ত্রিপুরভৈরবী । ইনি ললিতা বা মহাত্রিপুরসুন্দরীর রথবাহিনী। ব্ৰহ্মাণ্ডপুরাণে একে গুপ্তযোগিনীদের অধিষ্ঠাত্রী দেবীরূপে চিত্রিত করা হয়েছে।

ক্ষীয়মান বিশ্বের অধিষ্ঠান হল দক্ষিণামূর্তি কালভৈরব। সেই ভৈরবের শক্তিই ত্রিপুরভৈরবী । ইনি ললিতা বা মহাত্রিপুরসুন্দরীর রথবাহিনী। ব্ৰহ্মাণ্ডপুরাণে একে গুপ্তযোগিনীদের অধিষ্ঠাত্রী দেবীরূপে চিত্রিত করা হয়েছে। মৎস্যপুরাণে এর ত্রিপুরভৈরবী, কোলেশভৈরবী, রুদ্রভৈরবী, চৈতন্যভৈরবী ও নিত্যাভৈরবী ইত্যাদি রূপের বর্ণনা পাওয়া যায়। বিভিন্ন শাস্ত্ৰে ইন্দ্রিয়বিজয় ও সর্বত্র উৎকর্ষপ্রাপ্তির জন্য ত্রিপুরভৈরবীর উপাসনার কথা বলা হয়েছে। মহাবিদ্যাদের মধ্যে এর স্থান পঞ্চম। ঘোর কর্মের মধ্যেই ত্রিপুরভৈরবীর মুখ্য উপযোগ।

শ্ৰীশ্ৰীচণ্ডীর তৃতীয় অধ্যায়ে মহিষাসুর বধ প্রসঙ্গে এর ধ্যানের কথা বলা হয়েছে। ইনি রক্তবর্ণা, রক্ত বস্ত্ৰপরিহিতা; গলায় মুণ্ডমালাধারিনী এবং স্তনদুটি রক্তচন্দন লেপিত। এর হাতে জপমালা, পুস্তক এবং বর ও অভয় মুদ্রা ধারিনী। ইনি পদ্মাসীনা। দেবী ত্রিপুরভৈরবীই মধুপান করে মহিষের হৃদয় বিদীর্ণ করেছিলেন।
রুদ্রযামল ভৈরবীকুল সর্বম্বে এর উপাসনা তথা কবচের উল্লেখ পাওয়া যায়। সংকটমুক্তির প্রার্থনায় এর উপাসনা বিধান রয়েছে।

ঘোর কর্মের জন্য কালের বিশেষ অবস্থাজনিত অবস্থা শান্ত করার শক্তিকেই ত্রিপুরভৈরবী বলা হয়। এর অরুণ বৰ্ণ বিমৰ্ষতার প্রতীক। তাঁর গলায় সুশোভিত মুণ্ডমালাই আসলে বর্ণমালা। দেবীর রক্তলিপ্ত পয়ােধর রজোগুণসম্পন্ন সৃষ্টি প্রক্রিয়ার প্রতীক। হাতের অক্ষজপমালা বর্ণসমন্বয়ের প্রতীক, পুস্তক হচ্ছে ব্ৰহ্মবিদ্যা,ত্ৰিনেত্ৰ বেদত্ৰয় তথা স্মিতহাস্য হল করুণা।

আগম গ্ৰস্থানুসারে ত্রিপুরভৈরবী হচ্ছেন একাক্ষররপা (প্রণব) এর থেকেই সমগ্র ভুবন প্রকাশিত হচ্ছে আবার অন্তে এর মধ্যেই লীন হচ্ছে। ‘অ’ থেকে বিসর্গ পর্যন্ত ষোলটি বর্ণকে ভৈরব বলা হয় এবং কি থেকে ক্ষ পর্যন্ত বর্ণকে যোনি অথবা ভৈরবী বলা হয়। স্বচ্ছন্দােদ্যোতের প্রথম পাতায় এই বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা আছে। সেখানে ত্রিপুরভৈরবীকে যোগীশ্বরীরূপে উমা বলা হয়েছে। ভগবান শঙ্করকে পতিরূপে পাওয়ার জন্য ইনি কঠোর তপস্যার দৃঢ়সঙ্কল্প গ্ৰহণ করেছিলেন। বড় বড় মুনি ঋষিরাও এর তপস্যার নিষ্ঠা দেখে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন। এর থেকে সিদ্ধান্ত করা যায় যে ভগবান শঙ্করের উপাসনায় নিরতা উমার দৃঢ়সংকল্প চরিত্রই ত্রিপুরভৈরবীর পরিচয় জ্ঞাপন করে। ত্রিপুরভৈরবীর স্তুতিতে বলা হয়েছে যে ভৈরবী সূক্ষ্ম বাক ও জগতের মূল কারণের অধিষ্ঠাত্রী।

ত্রিপুরভৈরবীর অনেক রূপ আছে, যেমন সিদ্ধিভৈরবী, চৈতন্য ভৈরবী, ভুবনেশ্বরীভৈরবী, কমলেশ্বরীভৈরবী,সিদ্ধিভৈরবী উত্তরামায় পীঠের দেবী,নিত্যভৈরবী পশ্চিমামায়াপীঠে দেবী, তার উপাসক স্বয়ং ভগবান শিব, রুদ্রভৈরবী দক্ষিণােমায় পীঠের দেবী। ভগবান বিষ্ণু এর উপাসক। ত্রিপুরভৈরবী ভৈরব হচ্ছেন …

পরবর্তী তালিকা :

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।